অবশেষে ড্রেন দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ধীর গতিতে চলছে খনন কাজ, একাধিক ড্রেন উদ্ধার এখনো রয়েছে বাকি। বৃষ্টিতে পুরো শহর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পর টনক নড়ে মাগুরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় কর্মকর্তাদের। এরপর জরুরি সভা ডেকে ড্রেন ও অবৈধ দখলদার বিরুদ্ধে অভিযানে নামে জেলা প্রশাসক ও পৌরসভা। শহরের মূল ফটকের পানি নিষ্কাশনের মূল বাঁধায় রয়েছে ভায়না মোড় ও ডিসিকোর্ট মার্কেট।
১৯৭২ সালে মাগুরা পৌরসভা স্থাপিত হলেও পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। অবশেষে ড্রেন দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হচ্ছে দীর্ঘ ২৫ বছর পর।
১৬ সেপ্টেম্বর পৌরসভার চলমান জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্থানগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করেন নবাগত জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম। এ সময় তিনি জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে অবৈধ স্থাপনা অপসারণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহকে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন।
১৭ সেপ্টেম্বর মাগুরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও পৌর প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে অবৈধভাবে দখলকৃত ড্রেনগুলো পুনরুদ্ধার এবং ভরাট হওয়া ড্রেন উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
নবাগত জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. অহিদুল ইসলাম জানান, মাগুরাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে এবং জলাবদ্ধতা দূরীকরণে এ ধরনের কার্যক্রম নিয়মিত চলমান থাকবে।
পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই শান্তিবাগ, ইসলামবাগ, ভায়না, কলেজ পাড়া, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, হাসপাতাল পাড়া, পিটিআইপাড়া, ঢাকারোড, পারনান্দয়ালী, নিজনান্দয়ালী, হাজী রোড, তাঁতিপাড়া, পারলাসহ কয়েকটি স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পরে কয়েক ওয়ার্ডের লোকজন। একটু বেশি বৃষ্টি হলে কোনো কোনো জায়গায় ঘর থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে যায় তাদের জন্য।
মার্কাজ মসজিদ এলাকার বাসিন্দা মো. শাহারুল ইসলাম বলেন, সরকারি অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে ড্রেনের বক্স কালভার্ট নিজ খরচে নির্মাণ করেছি, আমার সীমানার আগে পরে কাঁচা নর্দমা থাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। ড্রেনের ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণ করতে বাধাগ্রস্তের পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সচল রাখতে আগে এবং পরে সংস্কার প্রয়োজন।
ভিটাসাইর এলাকা বাসিন্দা মো. নয়ন জানান, মাগুরা পৌরসভার রাস্তার ওপর নির্মিত ভবন অপসারণ না করায় ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় এলাকার জনগণ চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া গত ৫-৭দিন আগে সড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে গর্ত করে রেখেছেন উপর থেকে বালু পড়ে গর্ত ভর্তি হচ্ছে। দ্বায় সারা কাজ করে চলে যাচ্ছে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাগুরা-ঢাকারোড, ভায়না, মডেল স্কুল গেট, কাঁচা বাজার থেকে চাউলিয়া-নড়াইল সংযোগ সড়কে পৌরসভা ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ কাজ করলেও একাধিক অবৈধ ভবনের অংশবিশেষ অপসারণ না করায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় পৌরসভা। ফলে বৃষ্টি হলেই এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে যা গত দুই সপ্তাহের মধ্যেও দূর হচ্ছে না।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মো. আহসান বারী নির্বাহী প্রকৌশলী মাগুরা পৌরসভা তিনি জানান, পূর্বে নির্মিত ড্রেনের যে সকল স্থানে ভরাট বা বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে সে সকল স্থানে পুনঃখননের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কাজ চলমান রয়েছে একটু সময় লাগবে কাজ শেষ হতে।
টিএইচ